অনলাইনে আয় কিভাবে করবেন | আয় করার কিছু সহজ উপায় | A Monkey Tech
আপনি কি করছেন বা কিছু করবেন এই দুটো থেকেই শুরু করা যায় অনলাইন ইনকাম। দুনিয়া আজ অনেকএগিয়ে তাই মানুষ তার এক বিন্দু পরিমান সময় নষ্ট করে না। সবাই চায় তার ইনকামের পথ আরো সচল হোক। সময়ের সাথে সাথে তাই সবাইকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে আপগ্রেটেড করে নিচ্ছে। আপনি যদি কিছু করে থাকেন তাহলেও এই পথে আসতে পারেন আবার আপনি যদি একেবারেই কিছু না করে থাকেন তাহলেও সমস্যা নেই। এখনের যুগে আপনি ফুলটাইম অনলাইন জব করতে পারেন। কিন্তু এই জব সবকিছুর থেকে একটু আলাদা। তাই নিজেকে একটু অন্য ভাবে প্রস্তুত করুন।
![]() |
| Some easy ways to earn from Online |
ভূমিকা:
মানুষ এখন ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকাম করে। সহজ করে বলতে গেলে বলতে হয় 'বাতাসের টাকা' এই টাকা রোজগার করা সহজ। যেমন সহজ তেমন আবার কঠিন। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা আসবে কিন্তু আপনাকে ঘুমানোর আগে কিছু কাজ করতে হবে মানে পরিশ্রম করতে হবে। প্রযুক্তির এই যুগে তাই মানুষকে তালের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। প্রযুক্তি নির্ভর এই যোগ ইনকামের অনেক দ্বার উন্মোচন করে দিয়েছে। কোনো একটা ভালো করে শিখলেই ভালো একটা পরিমানের তাকে আয় করা সম্ভব হয়ে উঠে।
আজকে আমরা এমনি কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা করলে আপনি নিজেও অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন:
১। কিভাবে ব্লগিং (Blogging) করে আয় করবেন:
ব্লগিং মানেই হচ্ছে মুক্ত আলোচনা। আপনি যে বিষয় সম্পর্কে ভালো জানে, ভালো বুঝেন সে সম্পর্কে কিছু আপনার মতো করে লেখা। আর এই ইউনিক লেখাকেই গুগল পছন্দ করে। তাই গুগল চিন্তা করেছে যারা এরকম লিখতে চায় তাদেরকে আমরা পেমেন্ট করবো। তাই বর্তমান দুনিয়ায় ব্লগিংএর অনেক চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই আপনি ব্লগিং করে অনেক ভালো একটা আর্নিং করতে পারবেন।
২। কিভাবে কনটেন্ট রাইটিং করে আয় করবেন:
দুই নাম্বার যে বিষয়টা আলোচনা করবো সেটা হেডলাইন দেখেই বুঝতে পেরেছেন। কনটেন্ট রাইটিং আর ব্লগিং দুটো প্রায় একই রকম জিনিস। কিন্তু দুটোর আলাদা আলাদা সেক্টর রয়েছে। একজন ইউনিক কনটেন্ট রাইটারের অনেক চাহিদা রয়েছে মার্কেটে। কারণ আপনি গুগলের সাথে যাই করতে চান আপনাকে ইউনিক কিছু করতে হবে। পৃথিবী জুড়ে অনেক বড় ছোট মার্কেটপ্লেসে কনটেন্ট রাইটিং এর চাহিদা আকাশ সমান। তাই আপনি নির্দ্বিধায় এই সেক্টরে নেমে পড়তে পারেন।
৩। কিভাবে ইউটিউবিং করে আয় করবেন:
আপনি কি জেগে আছেন নাকি ঘুমিয়ে আছেন। ঘুমিয়ে থাকার দিন শেষ এখন আর কেউ ঘুমিয়ে থাকেনা। কারণ এখন সবার কাছেই ইন্টারনেট। তাই ইউটিউব শব্দটা এখন আর অপরিচিত না। আপনি যদি নিছক শুধু ইউটিউব দেখে থাকেন তাহলে এই লেখাটি আর পড়ার দরকার নেই। আর যদি মনে করেন কিভাবে ইউটিউব থেকে আয় করা যায় তাহলে এই লেখাটি সম্পূর্ণও পড়ুন। ইউটিউব থেকে খুব ভালো টাকা ইনকাম করা সম্ভব। যদি আপনার মেধা থাকে। আপনি যদি কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন হোলেই আপনি ইনকাম করতে পারেবন এই সেক্টরে। পৃথিবীতে হাজার কোটি রকমের বিষয় আছে যে গোল থাকে আপনি একটা বিষয় পছন্দ করে ও সেক্টরে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন। একটা সময় এসে আপনার ভালো একটা আর্ন হবে। দুনিয়াতে ইউটিউবই একটা প্লাটফ্রম যেখানে সব ধরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা আছে।
৪। কিভাবে ভিডিও দেখে আয় করবেন:
ইউটিউবের জন্য যেমন আপনি ভিডিও বানাচ্ছেন এমনি এই ভিডিও আরেকজন দেখে আয় করছে। এটা অবশ্য অন্য কিছু। মানে এটা ইউটিউবের মতো না। ভিডিও দেখে আয় করতে হলে কিছু বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটের মাদ্ধমে ইনকাম করতে হয়। কিন্তু সাবধান থাকতে হবে যেন ভুল বা ভুয়া সাইট না হয়। কারণ এই সেক্টরে দুর্নীতির একটা সম্ভাবনা থাকে।
৫। কিভাবে ওয়েবসাইট বানিয়ে আয় করবেন:
সকল ধরণের ইনফরমেশন মানুষ এখন ইন্টারনেটেই খুঁজে। আর এই তথ্য গুলো ওয়েবসাইটেই থাকে। তাই একটা ভালো ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনি প্রচুর ইনকাম করতে পারেন। একটা ভালো ডোমেইন হোস্টিং ব্যবহার করে অনায়াসেই এই কাজটি করে যেতে পারেন। কারণ মানুষ এখন দিনকেদিন অনেকটাই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে উঠছে।
৬। কিভাবে ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে আয় করবেন:
ড্রপশিপিং বিজনেসটাও অনেক মজার-বাজারে যে চাহিদা বেশি সেই পণ্য বিক্রি করা। মানে যে জিনিসটা অনেক কম মূল্যে কিনে মানুষ অনেক চরা দামে বিক্রি করছে সেই পণ্য আপনি নিজে সরাসরি কিনে বেশি দামে সেল করতে পারেন। ড্রপশিপিং বিজনেস করতে হলে আপনাকে বর্তমান বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। একটু ঠিক মত নজরদারি করলে আপনি এই ব্যবসায় সহজেই সফল হতে পারবেন। আপনি ইন্টারন্যাশনালিও এই বেজনেসটা করতে পারেন।
৭। কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করবেন:
আপনাকে সঠিক ভাবে সবকিছু জেনে এই কাজে নামতে হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এই শব্দটা এখনো অনেকেই সঠিক ভাবে বুঝে উঠতে পারেনা। সহজ করে যদি বলি তাহলে বলতে হবে -অন্যের জিনিস বিক্রি করা। মানে আপনি কারো প্রোডাক্ট সেল করে দিবেন আর সে আপনাকে সেই প্রোডাক্ট বিক্রির উপর কমিশন দেবে। বাজারে অনেক রকমের এই অ্যাফিলিয়েট দেশি-বিদেশি কোম্পানি আছে। আপনি পছন্দ করে এই ব্যবসা আরম্ভ করতে পারেন।
৮। কিভাবে অনলাইনে পড়িয়ে আয় করবেন:
এই মাধ্যমটা আগে বেশি পরিচিত ছিলোনা। যদিও বাইরের দেশে এর চাহিদা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশে লকডাউনে এর চাহিদা বেড়েছে। অনলাইন টিচার -মানে আপনি অনলাইন কাউকে পড়িয়ে ইনকাম করতে পারেন। অনলাইন টিউটরের এখন অনেক ওয়েবসাইট আছে চাই সেগুলোতেই যোগদান করে আপনি এই পেশায় নামতে পারেন। আপনার যদি কোনো এক বিষয়ের প্রতি খুব ভালো দক্ষতা থাকে তাহলেই আপনি খুব সহজেই এগিয়ে যাতে পারেবেন।
৯। কিভাবে ছবি বিক্রি করে আয় করবেন:
কে না ছবি তুলতে ভালোবাসে। স্মার্ট ফোন নাই এমন মানুষ পাওয়া এখন ভার। ছবি তুলা যাদের শখ এবং যারা এই কাজকে পেশা হিসেবে নিতে চান তাদের জন্য এই মাধ্যমে আয় করা সহজ। ভালো একটা স্মার্ট ফোন অথবা ক্যামেরা দিয়ে আপনার আশেপাশে থাকা সুন্দর দৃশ্য গুলো তুলে সহজেই এই কাজ করা যায়। আপনি যদি এডোবি ফটোশপ অথবা এডোবি ইলাস্ট্রেটর সম্পর্কে একটু ধারণা রাখেন তাহলে যেকোনো নরমাল ছবিকেই সুন্দর করে উপস্থাপন করতে পারবেন। এই ছবি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিক্রি করে খুব ভালো একটা টাকা আর্ন করা সম্ভব।
১০। কিভাবে অনলাইন সার্ভে করে আয় করবেন:
অনলাইন সার্ভে জিনিসটা কি? মানে হচ্ছে আপনি- আপনাকে বলা হলো যে এই কাজটা ৩০ মিনিট বা ১ ঘন্টায় করে দিলে আপনাকে ১০০ টাকা দেওয়া হবে। এটাই মূলত সার্ভে। আপনাকে অনলাইনে বলা হবে - উমক জিনিসটা বা একটা সাইট দেওয়া হবে সেখানে ৩০ মিনিট সার্ভে করলে কিছু টাকা দেয়া হবে। মূলত এটাই কাজ। এরকম কাজ করার জন্য গুগলে অনেক রকমের সাইট আছে। সেখানে একাউন্ট খুলে আপনি কাজ করতে পারেন। একটু সাবধান থাকতে হবে এসব কাজ করার জন্য অনেক রকমের ভুয়া সাইট আছে।
১১। কিভাবে গ্রাফিকস ডিজাইন করে আয় করবেন:
ডিজাইনের অনেক দাম --আপনার আশেপাশে যা কিছু দেখেন সব কিছুই একটা ডিজাইনের আদলে করা। একটু খেয়াল করে দেখবেন --কোন ডিজাইন টা আপনার নজর কেড়েছে। যেটাতে আপনার চোখ আটকাবে বুঝবেন এটাতে এমন কিছু আছে যা আপনাকে আকর্ষণ করেছে। আর এটাই হলো একজন ডিজাইনারের দক্ষতা। ডিজাইনের জন্য অনেক ধরণের সফটওয়্যার আছে -তার মধ্যে এডোবি ফটোশপ, এডোবি ইলাস্ট্রেটর এই দুইটাই ভালো করে শিখলে আপনি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবেন। আর আরো অ্যাডভান্স লেভেলে পৌঁছাতে চাইলে আপনাকে অনেক ঘাটাঘাটি করতে হবে। আমাদের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্দালয় ইউটিউবে এ সব আছে শুধু চোখ কান খোলা রেখে আপনাকে শিখতে হবে। ডিজাইনের অনেক বড় ছোট মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে আপনি কাজ পাবেন। আর ভালো একটা টাকা আর্ন হবে।
১২। কিভাবে জরিপ, সার্চ ও রিভিউ করে আয় করবেন:
এই সেক্শনেও কাজ করেও ভালো টাকা ইনকাম করতে পারেন। একটু আলাদা ধরণের করে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। অনেক রকমের ওয়েবসাইট আছে যারা বিভিন্ন কাজের জরিপ করে আর এই কাজে যারা অংশ নেয় তাদেরকে পেমেন্ট করে থাকে। এর বাদেও অনলাইন সার্চ ও পণ্যের উপর লেখালেখি করে ইনকাম করা যায়। এই কাজটা আবার খুব সতর্ক ভাবে করতে হবে কারণ এই কাজ করতে অনেক সময় ব্যক্তিগত তথ্য এবং কি ব্যাংকিং তথ্যও দেওয়া লাগতে পারে। তাই ভালো করে যাচাই করে নিবেন।
১৩। কিভাবে ভার্চ্যুয়াল সহকারী করে আয় করবেন:
ভার্চ্যুয়াল সহকারী হলো বাস্তবে পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করা। কিন্তু আপনি বাস্তবে না করে অনলাইনে করবেন। অনেক অনেক বড় বড় কোম্পানি তাদের কাজ করার জন্য ভার্চ্যুয়াল সহকারী নিয়োগ দিয়ে থাকে। এই সেক্টরে আপনি পার্ট টাইম, ফুল টাইম কাজ করতে পারেন। বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসে আজকাল ঘন্টা প্রতি হিসেবে কাজ করে থাকে। ভালো দক্ষতা থাকলে এই কাজ টি আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন।
১৪। কিভাবে অনুবাদ করে আয় করবেন:
অনুবাদের কিন্তু অনেক ডিমান্ড। কারণ এটা সবাই পারেনা। শুধু শিক্ষিত হলেই হবেনা -ভাষা সম্পর্কে ভালো একটা জ্ঞান থাকতে হবে। ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি অন্য যে কোনো ভাষা ভালো করে আয়ত্তে করতে পারলে এর চাহিদা অনেক অনেক বেশি। অনেক ডকুমেন্ট অনুবাদ করতে আজকাল এর বেশ কাজের অফার আসে। যেখান থেকে ভালো পরিমানের টাকা আয় করা সম্ভব। আপনার যদি স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, আরবি এবং জার্মান এর মতো ভাষা গুলোর ভাষায় ইংরেজি অনুবাদ অথবা ইংরেজি থেকে এই ভাষা গুলোর অনুবাদ করতে পারেন তাহলে নিশ্চিত থাকুন আপনি আপনার সম্মান আর টাকা দুটো একসাথে খুব ভালো করেই পাবেন।
১৫। কিভাবে পিটিসি করে আয় করবেন:
পিটিসি এই কাজটি অনেক মজার। অনেকেই এই কাজটা অনেক আনন্দ সহকারে করে থাকে। পিটিসি মানে (পেইড টু ক্লিক) আপনি ক্লিক করলেই টাকা দেওয়া হবে। অনেক ওয়েবসাইট আছে যারা শুধু এই কাজই করে। এরকম অনেক বিশ্বস্থ সাইট আছে যেখান থেকে আপনি ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি শুধু সাইট গুলোর দেওয়া বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন আর তার বিনময়ে পেমেন্ট করা হবে। প্রকৃত সাইট কি না দেখে চেক করে নিবেন কারণ অনেক ভুয়া সাইট আছে।
১৬। কিভাবে ডেটা এন্ট্রি করে আয় করবেন:
ডেটা এন্ট্রির কাজটা অনেক পুরোনো। কিন্তু এই কাজের আবার কোনো শেষ নাই। অখনো অনেকেই বুঝে উঠতেই পারেনা ডেটা এন্ট্রি জব বা এই কাজটা আবার কি ? এক কথায় যদি বুঝতে চান তাহলে বলবো- এই যে লেখাটি পানি পড়তেছেন এটাই একটা ডেটা। এই ডেটা টা যখন আমি লিখেছি --ঐটাকেই এন্ট্রি বলে। এই কাজের অনেক চাহিদা আছে মার্কেট প্লেসে। আর এটার শেষও হবেনা কোনোদিন। কাজেই এই কাজটা যদি করতে পারেন তাহলেও অংকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব হয়ে উঠে। ডেটা এন্ট্রির কাজের কোনো অভাব নাই -- পৃথিবীতে অনেক বড় বড় কোম্পানি এখন এই কাজ করায়। এই কাজের পার্ট টাইম আর ফুল টাইম জব দুটোই আছে।
শেষ কথা
কি বলিবো আর- আপনি এই লেখাটি শুধু পড়লেই হবেনা। চিন্তা করুন এই আপনার কোন কোয়ালিটি টা আছে। বিশ্বাস করুন খুব ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু আপনাকে একটা বিষয়ে খুব ভালো ভাবে দক্ষতা অর্জন করতে হবে -কারণ এখন চাকরির বাজার যে পরিমান কঠিন তাতে এই সেক্টরে আসা অনেকের জন্য জরুরি। যদি নিজের কর্মসংস্থান নিজেই গড়তে চান তাহলে নির্দ্বিধায় এখানে আসা উচিত। একটু চোখ খুললেই দেখতে পারবেন--হাজার হাজার দক্ষ যুবকরা এখন এই পথে নেমেছে। আমরা এখানে যত গোল বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন আপনি আসলে কোনটার জন্য পারফেক্ট। আমার মনে হয় আজকের সমস্ত আলোচনা আপনার জন্য অনেক ফলপ্রসূ হবে।
Tag: #অনলাইনে_আয়_করার_সহজ_উপায় #online_income_tips #digital_income
