ইউটুব ওয়াচটাইম বাড়ানোর উপায়--
আসলে 'YouTube Watch Time' বলতে আমরা কি বুঝি ?
এখন কিভাবে Watch Time দেখার সময় বাড়াবেন ?
১. মান এবং গুন্ সম্পন্ন কন্টেন্ট দিয়ে ভিডিও তৈরি করা --
২০০৫ সালে ইউটিউব ভালোবাসা দিবসে যাত্রা শুরু করে। পৃথিবীতে এটি বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। যদিও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করবে। ইউটিউবের প্ল্যাটফর্মে প্রতি ১ মিনিটে প্রায় 500 ঘণ্টার ভিডিও আপলোড হয়। স্বাভাবিক ভাবে বুঝাই যায় এর প্রতিযোগিতা কত কঠিন। তাই নিজের ভিডিওর সবাইকে বেশি সময় দেখতে আপনাকে অবশ্যই স্ট্যান্ডার্ড এবং গুনগত মানের উপর ফোকাসদিতে হবে।
ভিডিওর বিষয়বস্তু কি হবে ইটা আসলে একটা সৃষ্টিশীল মানুষের চিন্তা। আপনার ভিডিও যাদেরকে দেখাতে চান সেই লক্ষ্য কোটি জনসংখ্যার মানুষ জন কি দেখতে চায় তাদের মনের অনুভূতি কি, তারা কি জল্পনা কল্পনা করে এই বিষয়টা বুঝে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাহলেই আপনি যথার্থ জায়গায় পৌঁছাতে পারবেন।
২. ভিডিওর গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রথম (১৫) পনেরো সেকেন্ড---
এই দ্বিতীয় ধাপটি অত্যেন্ত প্রয়োজনীয় একটা জিনিস। কন্টেন্ট তৈরির পর এই ধাপটি যদি আপনি পার করতে পারেন মোটামুটি অনেক দূর এগিয়ে যাবেন। একটি ভিডিও যে দর্শক দেখবে তা তিনি এই সময়ের মধ্যেই টের করতে পারেন। একজন দর্শক যখন আপনার ভিডিও দেখবে তখন সে নিজেকে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করবে --
- আমার কি এই ভিডিওটি দেখা উচিত?
- যদি আমি এটিতে ক্লিক করি, আমি কি এটি দেখা চালিয়ে যাব?
- নাকি এখন দেখবোনা পরে দেখবো
৩. চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বেস বৃদ্ধি করা:
আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বেস তৈরি করা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক যা আপনি একবার আপনার নিজের চ্যানেলে উপস্থিতি করতে পারেন৷ আপনি যত বেশি দর্শক পাবেন, আপনার সাবস্ক্রাইবার তত বেশি হবে। ভিউয়ারশিপের এই বৃদ্ধি আপনার ভিডিওগুলি আপলোড করার মুহুর্তে দেখার সময়কে সরাসরি চালিত করে।
চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বৃদ্ধি করা কঠিন হতে পারে। সুতরাং, আপনার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বাড়াতে নিম্নলিখিত কৌশলগুলি ব্যবহার করতে পারেন:
আপনার YouTube চ্যানেল অপ্টিমাইজ করুন, Facebook, Twitter, বা Instagram এর মত সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টগুলিতে আপনার ভিডিওগুলি প্রচার করতে পারেন৷ আপনি একটি নির্দিষ্ট দর্শকদের নির্দিষ্ট কনটেন্ট দিয়ে তাদের আশা পূরণ করবেন।
দর্শকরা যখন আপনার চ্যানেলে প্রবেশ করে, তখন তারা বুঝতে পারবে যে আপনার কত সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। ইটা দেখে অনেকেই সাবস্ক্রাইব করবে এবং এই লোকেরা আপনার কন্টেন্টনেই রেগুলার দর্শক হয়ে উঠবে, যার ফলে আপনার YouTube ওয়াচ টাইম বেড়ে যাবে।
৪. মজাদার শিরোনাম এবং আকর্ষণীয় থাম্বনেইল নির্বাচন করুন:
YouTube টাইটেল বা শিরোনাম এবং থাম্বনেইলগুলি আপনার ভিডিওর বিষয়বস্তু কি তা বুঝতে সাহায্য করে৷ লোকেরা যখন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের বিষয়ে ভিডিওগুলি খুঁজ করে, তখন তারা শিরোনাম এবং থাম্বনেইল গুলো ভালো করে খেয়াল করে তারপর তারা ভিডিওটি দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করে।
যদি আপনার শিরোনামটি ভালভাবে লেখা হয়ে থাকে, তাহলে আপনি আপনার চ্যানেলে আরও দর্শকদের আকর্ষণ করার সুবিধা পাবেন। একই থাম্বনেইল এবং শিরোনাম অন্যান্য দর্শকদের জন্য সুপারিশ করা হবে যারা একই বিষয়বস্তু খোঁজ করছেন। এতে আপনার বিষয়বস্তুকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলবে। যারা একটি ক্রমবর্ধমান YouTube চ্যানেলকে সবসময় খোঁজে।
৫. শ্রোতা ধরে রাখার উপর কৌশল ব্যবহার করুন:
শ্রোতা ধরে রাখা মানে - দর্শকদের দ্বারা দেখা একটি YouTube ভিডিওর গড় শতাংশ। আপনি ইউটিউবে কাজ করতে চাইলে, আপনাকে শ্রোতা ধরে রাখার কৌশলের উপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখতে হবে। এটি আপনাকে YouTube ওয়াচ টাইম বাড়াতে সাহায্য করবে৷ আপনার YouTube পৃষ্ঠার Audience পৃষ্ঠায় প্রতিটি ভিডিওর দর্শক ধরে রাখার উপর সামারি দেওয়া আছে -এগোলো দেখে আপনি কৌশল ব্যবহার করতে পারেন।
Audience ধরে রাখার পৃষ্ঠাটি আপনাকে একটি অন্তর্দৃষ্টি দেবে যেখানে আপনার ভিউয়ারশিপ কমছে এবং কোথায় এটি শীর্ষে পৌঁছেছে এই তথ্য গোল পাবেন৷ এই তথ্য আপনাকে আপনার দর্শক ধরে রাখতে এবং ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে।
আপনার ভিডিও বেশিক্ষন দেখার হার বাড়ানোর ফলে আপনি আপনার বিষয়বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট করতে পারলে দর্শক অর্জন করতে পারবেন, যার ফলে YouTube ওয়াচ টাইম বৃদ্ধি পাবে।
৬. বড় বা লং-টেইল ইউটিউব কীওয়ার্ড ব্যবহার:
লং-টেইল বা বড় ইউটিউব কীওয়ার্ডের ব্যবহার আপনার সাবস্ক্রাইবার বাড়াতে হেল্প করতে পারে। টার্গেট শ্রোতারা এর ব্যবহারের মাধ্যমে আরও বেশি ট্রাফিক চালাতে সক্ষম হবে এবং এই প্রক্রিয়ায় আপনার ওয়াচ টাইম আরো বাড়বে। এই সিস্টেমটা আপনার প্রতিযোগীদের পরাজিত করতে সক্ষম করবে। যার ফলে আপনি নিজের চ্যানেল নিয়ে দিনকে দিন এগিয়ে যাবেন।
কন্টেন্ট এর জন্য লং-টেইল কীওয়ার্ড তৈরি করার জন্য অনেক গোপন কৌশল রয়েছে। আপনি সেগুলিকে খুব সহজ ভাবেই অর্জন করতে পারেন যা YouTube-এর নীতিমালার অনুযায়ী পরে। আপনার দর্শকদের আগ্রহের বিষয়ে আপনি ইউটিউব সার্চবারে সার্চ করনেই দেখবেন অনেক গুলো সাজেশন আসছে ৷ সেখানে, আপনি দীর্ঘ-টেইল কীওয়ার্ড ধারণাগুলি পাবেন যা আপনি নিজের ভিডিওর জন্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন৷ সবশেষে এটি আপনার চ্যানেলের জন্য YouTube ওয়াচ টাইম বৃদ্ধির করতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন- কেন আপনি ইউটিউবিং করবেননা ?
৭. আলাদা আলাদা ভিডিও প্লেলিস্ট তৈরি করা:
আপনার চ্যানেলে যদি ভিডিও প্লেলিস্ট তৈরী করে রাখেন তাহলে একজন দর্শক তার প্রয়োজন অনুসারে এক জায়গাতেই সব ভিডিও দেখে নিতে পারলো। একটু বিশদভাবে বলতে গেলে, যদি একজন দর্শক আপনার ভিডিও দেখা শুরু করে এবং প্লেলিস্টের পরবর্তী ভিডিওতে অবিরত থাকবে, আপনি এখানেও ওয়াচ টাইম বৃদ্ধিতে ক্রেডিট পাবেন। প্লেলিস্টের ভিডিওগুলি অন্য লোকেদের অন্তর্গত কিনা সেটা দেখার বিষয় নয় যার যেটা দরকার সে সেটা দেখে নিবে।
আপনি আপনার সমস্ত ভিডিও সুন্দর ভাবে সাজাতে বিভিন্ন ভিডিও প্লেলিস্ট তৈরি করতে পারেন।
আপনার প্লেলিস্ট ক্রমানুসারে সংগঠিত আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। নিশ্চিত করুন যে ভিডিওগুলি প্রাসঙ্গিক একই বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে সাজানো। ভিউয়ারশিপ বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। প্লেলিস্টগুলির একটি ভিউ সেশনে আপনার আরও বেশি ভিডিওতে দর্শকদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা রয়েছে৷ এটি আপনার চ্যানেলের যোগ্যতা বাড়ায় এবং আপনার YouTube ওয়াচ টাইমকে অগ্রসর করে৷
আপনি যদি একজন প্রফেশনাল YouTuber হন, তাহলে আপনি YouTube-এ সাফল্য পেতে হলে অনেক ধৈর্য আর পরিশ্রমের সাথে কাজ করে যেতে হবে। যে কোনো ইউটিউব ক্রিয়েটের এর প্রধান সম্ভাবনা হল আয় বা মূলধন লাভ করা। ইউটিউব বর্তমানে অনেক অনেক ব্যক্তি এবং উদ্যোগের জীবিকার উৎস হয়ে উঠেছে।
পরিশেষে বলা যায়, YouTube watch time বাড়ানোর সাথে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলি ভয়ঙ্কর বলে মনে হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত, এটি আরও মূল্যবান।
